৫ দফা দাবিতে বেবিচক’র প্রতিবাদ সমাবেশ

জয় বৈদ্য, কক্সবাজার।।বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ও এয়ারপোর্ট এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক) বিভাগকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার (১৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টার সময়  কক্সবাজার এয়ারপোর্ট এলাকায় এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বেবিচকের স্বনির্ভরতা ও টেকসই উন্নয়নের ওপর জোর দেন এবং এভসেক বিভাগকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, বেবিচকের এয়ারপোর্ট এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই বিভাগকে দুর্বল বা অকার্যকর করার যেকোনো প্রচেষ্টা জাতীয় বিমান চলাচল নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

সমাবেশ থেকে নিম্নলিখিত ৫ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়-

১. বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের স্বনির্ভরতা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।
২. বেবিচকের এভসেক বিভাগকে অকার্যকর করার সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
৩. বেবিচকের অর্গানোগ্রাম পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. বেবিচকের অধীনে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
৫. ২০১৬ সালে চালুকৃত In Aid to Civil Power নিয়োগের একটি সময়বদ্ধ পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হবে এবং বেবিচকের নিজস্ব জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এভিয়েশন সিকিউরিটি খাতে কোনো অব্যবস্থাপনা ও ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া হবে না।

বেবিচকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী’রা জানান,
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একটি টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO) এর ১৯টি টেকনিক্যাল এনেক্স এর যথাযথ বাস্তবায়নই এ সংস্থার মূল কাজ। প্রতিষ্ঠানটি চলে স্বল্পকালীন প্রেষনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগন দ্বারা, যার অধিকাংশই বিমান বাহিনীর। তার উপর আবার In Aid to Civil Power গত ৮ বছর ধরেই নজিরবিহীন ভাবে চলছে। সকল গুরুত্বপূর্ণ দায়দায়িত্ব তাঁরাই নিয়ন্ত্রন করছে।

তারা জানান, আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের সংস্কার চাই। আমরা চাই সরকার আমাদের দিকে নজর দিক। এ প্রতিষ্টান কিভাবে চলে। প্রকৃতপক্ষে, মাঠ পর্যায়ের সকল কার্যক্রম সিভিল এভিয়েশনের নিজস্ব জনবল দ্বারা পরিচালিত হয় এবং সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানসম্মত রাখতে নিরলস পরিশ্রম করছে সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ।

সম্প্রতি, অতি গোপনে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের প্রস্তাব তৈরি করার কারণে বেবিচকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ পদক্ষেপের কারণে বেবিচকের সকল বিমানবন্দরে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা বর্তমান সরকারকে বে-কায়দায় ফেলার একটি পরিকল্পনা বলে অনেকে মনে করছেন।
এ প্রস্তাবে যেহেতু বাংলাদেশ বিমানবাহিনী থেকে ৭০% লোকবল আসবে (প্রায় সাত হাজার জনবল), সেহেতু একই সাথে প্রায় সাত হাজার জনবল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও বেবিচকের অর্থাৎ দুই প্রতিষ্ঠানের পদ দখল করে রাখবে এবং দুই প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সুবিধা পাবে, যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিম্নমুখী হবে, একই সাথে দেশের বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহোদয় যে’ থ্রি জিরো তত্ত্ব’ প্রকাশ করেছেন সেখানে দুইটি তত্ত্ব হলো শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য দরিদ্রতা। যদি বেবিচকের নিজস্ব জনবল নিয়োগ না দিয়ে বাহিনী থেকে জনবল নিয়ে আসে তাহলে তারা একাধিক প্রতিষ্ঠানের একাধিক পদে বহাল থাকলে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে না, সেই সাথে দেশের বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে, যা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’ এর পরিপন্থী। অতএব, বাহিনী থেকে জনবল না এনে বেবিচকের নিজস্ব স্থায়ী জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদেরকে পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ প্রদান করে বিমানবন্দরের যথাযথ মান উন্নয়ন করা হউক। ফলস্বরুপ, দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে এবং বেকারত্বের হার হ্রাস পাবে বলে আশা করছি।
প্রেষণের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে ICAO সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা হতে আপত্তি প্রদান করা হয়েছে।
তারা আরো জানান, এ প্রস্তাব জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার গঠিত ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন’ এর সুপারিশ নং ৭.২৫ এর সাথে সাংঘর্ষিক, যেখানে বলা হয়েছে যে, সামরিক বাহিনীতে কর্মরত কোনো কর্মকর্তাকে অসামরিক পদে প্রেষণে নিয়োগ করা সমীচীন হবে না।

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সর্বশেষ