কুয়েতের জাতীয় গ্র্যান্ড মসজিদ ‘মসজিদ আল কেবির’ শুধু নামাজের স্থান নয়, এটি ইসলামি স্থাপত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা ক্যালিগ্রাফি শিল্পীদের সৃষ্টিকর্ম স্থান পেয়েছে এই মসজিদে, যা এখন বৈশ্বিক ক্যালিগ্রাফির এক জাদুঘরে পরিণত হয়েছে।
গ্র্যান্ড মসজিদের দেয়ালজুড়ে রয়েছে তুরস্কের ওসমানীয় ধাঁচের ৃশিল্প, ইরানের সূক্ষ্ম পারস্য ঘরানার লিপি, মিসরের ঐতিহ্যবাহী কুফি ও থুলুথ শৈলী, সৌদি আরবের আধুনিক ঐতিহ্যের মিশ্রণ এবং ভারত-পাকিস্তানের নাস্তালিক ঘরানার ক্যালিগ্রাফি। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, ইয়েমেন, সিরিয়া, তিউনিশিয়া, মরক্কো, মালয়েশিয়া, জাপান, চীন, স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু দেশের ক্যালিগ্রাফি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে এখানে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের শিল্পী উসামা হকের ক্যালিগ্রাফি এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় যুক্ত হয়েছে, যা প্রবাসী বাংলাদেশি ও দেশের মানুষের জন্য এক বিরল গর্বের বিষয়। গ্র্যান্ড মসজিদের মতো বিশ্ববিখ্যাত স্থানে কোনো দেশের শিল্পকর্ম স্থান পাওয়া শুধু শিল্প প্রদর্শনী নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এমন অর্জন সেই দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও শিল্পশৈলীর প্রতি আস্থার প্রতিফলন হিসেবেও বিবেচিত হয়।
বিশ্বের ক্যালিগ্রাফি অঙ্গনে বাংলাদেশ এখনো খুব বেশি পরিচিত নয়। তাই উসামা হকের ক্যালিগ্রাফি স্থান পাওয়া শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এটি বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। এ অর্জন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কূটনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইসলামি শিল্প ও ক্যালিগ্রাফি বিশ্ব মুসলিম সমাজে এক অনন্য সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন তৈরি করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গ্র্যান্ড মসজিদে বাংলাদেশের শিল্পের উপস্থিতি দেশটিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাংস্কৃতিকভাবে আরও শক্তিশালী পরিচিতি দেবে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন গ্র্যান্ড মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছে উসামা হকের আঁকা দুটি ক্যালিগ্রাফি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। ক্যালিগ্রাফি দুটি গ্রহণ করেন গ্র্যান্ড মসজিদ কর্তৃপক্ষের প্রধান ড. বদর মা’জুন আল ঢাফিরি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।