সোমবার | ৬ অক্টোবর, ২০২৫ | ২১ আশ্বিন, ১৪৩২
ফাইল ছবি

জানালেন পশ্চিমবঙ্গের আমদানিকারকেরা

বাংলাদেশ থেকে ১৩ দিনে ১৪৫ টন ইলিশ গেছে ভারতে

ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশ থেকে ভারতে ১৩ দিনে প্রায় ১৪৫ টন ইলিশ গেছে। দেশটির দুই রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় এসব ইলিশ গেছে। পশ্চিমবঙ্গের মাছ আমদানিকারকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেনাপোল ও আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে ১৪৪ টন ৪৮৯ কেজি ইলিশ এসেছে। এর মধ্যে ত্রিপুরায় গেছে মাত্র ৩৯ টন ২৭৫ কেজি ইলিশ আর বেনাপোল দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এসেছে ১০৫ টন ২১৪ কেজি। বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। ৫ অক্টোবরের মধ্যে এই রপ্তানির কাজ শেষ করতে হবে বলে বলা হলেও ৪ অক্টোবর রাত থেকে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য পাঁচ দিন সব বন্দর দিয়ে আমদানি–রপ্তানি বন্ধ ছিল। ফলে ইলিশ আমদানির জন্য ১৩ দিন সময় পাওয়া গিয়েছিল।

পশ্চিমবঙ্গের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ক্রেতাদের চাহিদা সত্ত্বেও তাঁদের হাতে ন্যায্য মূল্যে ইলিশ তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ইলিশ আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ রুপি দরে ইলিশ বিক্রি করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে বিভিন্ন বাজারের মাছ ব্যবসায়ীদের। বাংলাদেশেও এবার ইলিশ কম ধরা পড়ায় সেখানকার বাজারেও দাম অনেক বেশি। ফলে রপ্তানিকারকেরাও বেশি দামে মাছ রপ্তানি করতে আগ্রহী হননি।

বাংলাদেশ সরকার সে দেশের ৩৭টি সংস্থাকে সাড়ে ১২ ডলার মূল্যে ৫ অক্টোবরের মধ্যে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল। সে অনুযায়ী, ১৭ সেপ্টেম্বর ৩৭ টন ৪৬০ কেজির ইলিশের প্রথম চালানটি ভারতে এসেছিল। এরপর পর্যায়ক্রমে মোট সাতবারে ইলিশ এসেছে। সর্বশেষ ২৯ সেপ্টেম্বর ইলিশ এসেছে মাত্র ৪ টন ৫২০ কেজি। ২৪ সেপ্টেম্বর ইলিশ এসেছে মাত্র ১ টন ৭২০ কেজি। এই সময়ের মধ্যে ত্রিপুরায় আটবারে মোট ইলিশ এসেছে ৩৯ টন ২৭৫ কেজি।

সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘আমরা জুলাইয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম যে পর্যাপ্ত সময় দিয়ে রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু এবার অতীতের চেয়ে আরও কম সময় দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে দুর্গাপূজা শুরু হওয়ায় আমদানি–রপ্তানি পাঁচ দিন বন্ধ ছিল। তবে এবারের মতো এত কম পরিমাণ ইলিশ অতীতে কখনো আসেনি। গত বছর বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সত্ত্বেও ৫৭৭ টন ইলিশ আমদানি হয়েছিল।’

অবশ্য সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ প্রথম থেকেই বলেছিলেন, এত স্বল্প সময়ের মধ্যে অনুমোদন দেওয়া ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ আমদানি কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের চাহিদা থাকলেও পাঁচ বছর ধরে ইলিশ আসা ক্রমেই কমছে। গত বছর বাংলাদেশ সরকার শেষ মুহূর্তে ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির জন্য বরাদ্দ করলেও সময়ের অভাবে মাত্র ৫৭৭ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করা সম্ভব হয়েছিল।

আমদানিকারকদের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০২১ সাল থেকেই এই পরিস্থিতি চলছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন রপ্তানির জন্য অনুমতি দিলেও আমদানি করা সম্ভব হয়েছিল মাত্র ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। ২০২২ সালে ২ হাজার ৯০০ মেট্রিক টনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমদানি করা হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। আর ২০২৩ সালে ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন অনুমোদন দেওয়া হলেও আমদানি করা সম্ভব হয়েছিল মাত্র ৫৮৭ মেট্রিক টন।

আপনার মন্তব্য

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

অনুসরন করুন

সর্বশেষ খবর

সম্পাদক

মোঃ ইউনুছ আলী

স্বত্ব © ২০২৫ মাতৃভূমির দৈনিক চিত্র

অনুসরণ করুন

যোগাযোগ : ৭১, পুস্প প্লাজা (চতুর্থ তলা), কারওয়ান বাজার, ঢাকা – ১২১৫।
ফোন : +৮৮ ০১৯২৯-৩৬৫২২৯। মেইল : dailychitro123@gmail.com

Design & Developed by : Rose IT BD