রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীবের বাসায় এ বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে কোটা পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভা শেষে বিকেল ৫টায় রাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ জানান, সিন্ডিকেট প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে। এছাড়া শনিবার জুবেরী ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় তদন্তও হবে।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, শনিবার প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি স্থগিতের যে ঘোষণা হয়েছে, সে বিষয়টি সিন্ডিকেটকে জানানো হয়েছে। সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় আজ থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা আমরা শুরু করছি না। সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জুবেরী ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকাল একজন উপ-উপাচার্য শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। সিন্ডিকেট নিন্দা জানিয়েছে এবং সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাবিতে আগে কর্মরতদের সন্তানদের জন্য ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি উপাচার্য এটি বাতিলের ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
সর্বশেষ ১৭ সেপ্টেম্বর তারা দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলনে নামে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য মাঈন উদ্দিনসহ তিন কর্মকর্তা জুবেরী ভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চালাতে থাকেন। পরে উপাচার্য মধ্যরাতে ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি আপাতত স্থগিত।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাতেই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তারা জানিয়েছেন, সোমবার থেকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা না দেওয়ায় তারা কমপ্লিট শাটডাউনে যাচ্ছেন। তবে ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় রাকসু নির্বাচন এ কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
রাবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে না দেওয়ায় আমরা হতাশ। আগামীকাল থেকে আমরা কমপ্লিট শাটডাউনে যাচ্ছি।